টায়ারপোড়া গন্ধ
কলেজে যাওয়ার পথে—
গাড়ির টায়ারপোড়া গন্ধ শুঁকেছি ইচ্ছায় অনিচ্ছায়;
শহরে রাস্তার দুধারে, অলিতে গলিতে
শীতে টায়ার পোড়াও যেন উৎসব!
এ গন্ধ আমার অনেক চেনা।
কিন্তু এবারের গন্ধটায় বুকে ধক করে উঠলো—
মাংস পোড়ানোর তীব্র ঝাঝাঁলো গন্ধ ভেসে আসছে;
দুই গন্ধের তীব্র দ্বন্দ্বের পরিণাম: চিরচেনা গন্ধটাও অচেনা।
না, শুধু টায়ার না, আস্ত গাড়িসমেত পুড়ছে!
পুড়ছে কাঁচ, লোহালক্কর, গাড়ির সিট আর;
আর পুড়ছে সিটে বসে থাকা আস্ত মানুষ!
“হয়তো হবে দুর্ঘটনা” ভেবে বসে থাকা আমি,
আর আমার রাজনৈতিক সন্ন্যাস;
“কারা যেন আগুন ছুঁড়ে পালালো ওদিক”,
উৎসুক জনতার চকমকে চোখ,
জ্যান্ত শবদাহের হঠাৎ আয়োজনে
এ কার সর্বনাশ!
কে রুধিলো রোজগারী দুহাত,
আধো বুলির নির্মল সুখভরা বুক;
কে পোড়ালো কার সহোদর,
কার পতি-পুত্র-কন্যার সংসারী সুখ!
মানুষ পোড়ালো মানুষ, জিঘাংসার জেরে নয়—
এ মানুষপোড়ার উৎসবে বাড়ে ভোটারের উদ্দীপন,
নেতার আস্ফালনে আসে জোর;
অশ্রুসমেত আগুনচোখার তেজী বক্তব্যে
রাজনীতির মাঠ ফেটে হয় চৌচির।
যার ফায়দা সে লুটে রাজনৈতিক প্রহসনে
আর মানুষ মরে, মানুষ পুড়ে, তবু আসে না'ক ভোর।
শহরে-গ্রামে জেগেছে আবার নির্বাচন,
ঝলসানো পোড়ামাংস ক্রেসির ভগবান চরণে
ছিলো সামান্য বিসর্জন!
১৪ নভেম্বর, ২০২৩, ঢাকা।